Monday, September 9, 2024

আরজিকর প্রসঙ্গে - দুটো কথা

 দুটো কথা বলতে এলাম। এক, যে কোনো বড়োসড়ো প্রোফেশন-ই সমাজের একটা খণ্ডিত প্রতিচ্ছবি, একটা ক্লাসের মোটামুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ স্যাম্পল। অর্থাৎ, যে সমাজে শিক্ষা ব্যবস্থা ঘুণ ধরা, রাজনীতি পোকায় কাটা, সেই সমাজে যে কোনো, একেবারে যে কোনো পেশায় দেখবেন ভেতর অব্দি দুর্নীতির পাঁক। সেই সব-ই পরিষ্কার হলেই ভালো। আস্তে আস্তেই হোক। কিন্তু এই ঐ শুধু ডাক্তাররা কী করাপ্ট বলে ইঞ্জিনিয়ারদের হৈহৈ করার মানে নেই। কিংবা অ্যাকাডেমিশিয়ানরা কি পচা লোক বলে নাট্যকারদের আত্মশ্লাঘা বোধ করার কারণ নেই। অথবা ইশ সরকারি দপ্তরে তো সব খোক্কস মানেই বেসরকারি সবাই আদর্শ সন্তান অনিল কাপুর এসব ভাবার কারণ নেই। উপরিউক্ত সবকটা খোপেই হয় কেন্দ্রের পোষা না হলে রাজ্যের পোষা ঘুঘু হেগে ভর্তি করে রেখেছে। (এবং তারা আগামীতেও হাগিবে।)


আর দুই এই যে, আমি ডাক্তার নই, কিন্তু আমার কলেজ জীবনের আশেপাশে অর্থাৎ এই মিলেনিয়ামের প্রথম দশটা বছর যারা সরকারি ডাক্তারি কলেজে পড়েছিলেন তারা আমার বন্ধু-বান্ধব। সেই সময়, মানে যাকে কবিতায় বলে শূন্য দশকে, কোনো প্রতিষ্ঠিত সরকারি ডাক্তারি কলেজেই গণটোকাটুকি হত না, বা পাইকিরি রেটে লোকে টাকা দিয়ে পাশ করতো না বলেই আমি বিশ্বাস করি। তাদের অনেককেই আমি প্রত্যক্ষভাবে চিনি, তাদের অন্য কী দোষগুণ আছে, সে আমার অধিগত নয়, এমনিও আমি স্টিরিওটাইপিং ব্যাপারটা ভারি অপছন্দ করি। (সেই শূন্য দশকের পরে কী হত? আমি জানি না, কিন্তু "জানি না" মানে শুধুই "জানি না"। না জেনে নিন্দেমন্দ করবো না।)

তবে কোনো কলেজেই টুকলি হ'ত না এও বলবো না। বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে টুকতে না দেওয়ায় ছাত্ররা ভীষণ প্রতিবাদ করছে এ তো আমার স্বচক্ষে দ্যাখা। তাদের সেইসময়ে যুক্তি ছিল ক্যাম্পাসিং তো হচ্ছেই না, অন্তত উন্মুক্ত চোথার সুযোগ দেহি। সেও ঐ বন্ধু-বান্ধবীদের সূত্রেই দেখা। সে-ও সবাই যে টুকতো তা-ও না, আর যারা টুকতো তারাও এখন দেশ-দেশান্তরে ক্লায়েন্টের বাঁশি বাজাচ্ছেন ত্রাহিরবে, মানে কাজটাজ নির্ঘাত শিখেই নিয়েছেন। চাকরির ভয়ের থেকে বড়ো রিংমাস্টার আর কে আছে?

তবে এই বাজারে তাদের কারুর কারুর হোলিয়ার দ্যান দাউ অ্যাটিচিউড দেখলে আমার দাউদাউ করে জ্বলছে, এই আর কি।

No comments:

Post a Comment