Sunday, December 5, 2010

কৈফিয়ৎ

সত্যি বলছি, আজকাল আর ওটা হয় না, বিশ্বাস করুন... এই নিয়ে বার পাঁচেক খাতাটা খুলে বসেছি, এক লাইন করে ভুলচাল লিখেওছি ... ব্যস ... ওই অব্দিই ... মাইরি বলছি, আমি জানতাম, আমার দৌড় ঐ চাট্টি কবিতার বেশী নয়, তাও ...

এই মাসটাই না এইরকম, জানেন তো, এই ডিসেম্বরের শুরুটা ... কলকাতায় ঠিক যে সময় বরফ পড়তে শুরু করে, ঠিক সেই সময় - আমি বুঝতে পারি ও এসেছে, ওর গলা পাই, ও আমাকে ডুবিয়ে দেবে, দেবেই ...

কফি হাউসে ঢং ঢং করে নটার ঘন্টা পড়তো, আর দুটো শরীরকে চেয়ারের জিম্মায় ফেলে রেখে দু-কাপ ইনফিউশান বেরিয়ে পড়তো ভিড়ে, আর ব্যাকগ্রাউন্ডে চিৎকার করে উঠতেন জন লেনন ... সেও একটা সময় ছিলো বুঝলেন, সারা রাত আমি ফুল ছিঁড়ে ছিঁড়ে বীজ ছড়াতাম ও-র বুকে, আর সকালে দেখতাম কেমন সে পাপবৃক্ষের ডালে এসে শিষ দিচ্ছে একটা নতুন আনকোরা পাখি ... দেরাজ থেকে টেনে নিতাম অস্ত্র-শস্ত্র, কালি কলম আর নির্ভুল বেজে উঠতো রিংটোন... আঃ !

ঠিক এই সময়, একটা আওয়াজ , খুব জোর ... কলকাতায় কারফিউ শুরু হলো, মা বললেন, রাস্তায় নাকি খুব গন্ডগোল, দুটো বোকা লোক গুলি খেয়ে মরে গেছে আর বাবা টিভি থেকে মুখ না সরিয়ে বললেন, 'এদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া উচিৎ' ... আমি চুপিচুপি ফিরে গেলাম কোণের ঘরে, আমার চৌকিতে ... আর ভোররাতের স্বপ্নটা খুব দ্রুত বিস্বাদ হতে হতে দেখলাম সেই পুকুরপাড়টায় আমি আর ছোটকা বসে আছি, ছোটকা একটা নিভে যাওয়া বিড়িতে ফুঁ দিয়েই চলেছে আর আমার হাতে কে যেন ধরিয়ে দিয়ে গেছে ওর একটা চিঠি ... এমন সময় বাঙ্গালপাড়ার দিক থেকে হু-হু করে হাওয়া দিতে শুরু করলো, ডিসেম্বরের হাওয়া ... আমি ছুটতে শুরু করলাম ... নিতাইদার ফ্যাক্টরি থেকে বাচ্চা আমার নাম ধরে ডাকছে পিছন থেকে, সারাদিন জানলায় বসে থাকা মিত্তির বাড়ির বৌটাও কেমন তাকিয়ে দেখছে আমায় ... আর আমি বুঝতে পারছি আলো নয় ... 'অন্ধকার ক্রমে আসিতেছে'...

তারপর থেকেই আর ওটা হয় না, জানেন ... এই ডিসেম্বর মাসটাই ...আমি জানি ও রোজ আসে ... আর বিকেলের দিকটায় খুব হাওয়া দেয় পুকুরপাড়ে গেলে... আর কিচ্ছু জানিনা ...