Posts

Showing posts from April, 2021

সিম্পসন’স প্যারাডক্স

Image
  ১) একটা ধাঁধার মত ছোট্ট অঙ্ক দিচ্ছি, মন দিয়ে শুনুন। ধরা যাক, আপনার পাড়ায় দুটো ইস্কুল, আদর্শ বিদ্যানিকেতন আর হরিপুর মেমোরিয়াল। দুই স্কুলের খুব রেষারেষি, কে কার থেকে বেশী ভালো সেই নিয়ে বিতণ্ডার শেষ নেই। আপনি আবার এই পাড়ার মোড়ল, ঠিক করলেন, একটু খতিয়ে দেখবেন কোথায় কত নম্বর উঠেছে বোর্ডের পরীক্ষায়। দেখতে গিয়ে যা পেলেন, তা হচ্ছে এই – হরিপুরের ছেলেরাও আদর্শের থেকে গড় নম্বর পেয়েছে বেশী, আবার মেয়েরাও বেশী … ধরা যাক, তাদের গড় নম্বর এই রকম (সব-ই মনগড়া)।   হরিপুর (ছাত্র সংখ্যা) আদর্শ (ছাত্র সংখ্যা) ছেলে ৮৪   (৮০ জন) ৮৫ (২০ জন) মেয়ে ৮০   (২০ জন) ৮১   (৮০ জন)   আপনি এই অব্দি দেখে লিখতে যাচ্ছেন ছেলে-মেয়ে দুই বিভাগেই আদর্শ একটু এগিয়ে, এমন সময় হরিপুরের হেডমাস্টার জিগ্যেস করে বসলেন, আলাদা-আলাদা করে নয়, সব মিলিয়ে কার কত? কী আশ্চর্য কাণ্ড, সব মিলিয়ে দেখলে হরিপুরের গড়ঃ ৮৩.২ আর আদর্শের গড়ঃ ৮১.৮ ! মানে সোজা কথায়, ছেলে-মেয়ে মিশিয়ে দেখলে হরিপুর এগিয়ে, অথচ আলাদা-আলাদা করে আদর্শ...

জাস্ট অ্যানাদার স্নোম্যান

Image
কথাটা হচ্ছিলো কোহেন-কে নিয়ে? সবথেকে প্রিয় গান কোনটি? ফেমাস ব্লু রেনকোট? হ্যালেলুইয়া? সো লং ম্যারিয়ান? ফেয়ারওয়েল ভ্যালেন্টিনা? কোনটা? যদি আজকেই ঠিক একটু পরেই ঢলে পড়ি মৃত্যুর মুখে, শেষবারের মত শুনতে চাইলে শুনবো কোনটা?   আসলে কোহেনের সব-সব গান বড়ো প্রিয়, সব গান-ই আসলে আমার। শ্রীজাত-রই একটা প্রিয়তম লাইন একটু পালটে আমার বলতে ইচ্ছে করে,  "আজ থেকে সব মিথ্যে কথা তোমার হলো, যেমন আমার সব কান্নাই লেনার্ড কোহেন"। তাই একটা বাছা বাতুলতা, তাও ... গানটা হয়তো অনেকের শোনা, তাই কোহেনের গলায় আবৃত্তির ভিডিওটাই দিলাম - সেই ডার্ক কফির মত, বিগত জন্মের প্রেমের মতো, গভীর রাতলাগা কণ্ঠস্বর। কোহেনকে চাক্ষুষ দেখা হলো না এ জন্মে, এ এক বড়ো আক্ষেপ। এক বন্ধুনি যে দেখেছে তাঁকে, বলেছিলো, স্টেজে উঠলেন কোহেন। ষাট বছরের বৃদ্ধ প্রেমিক কোহেন, গলা অল্প কাঁপে উঁচু তারে। কোহেন গাইছেন না, শুধু আস্তে আস্তে আবৃত্তি করছেনঃ “My mirrored twin, my next of kin, I’d know you in my sleep And who but you would take me in, a thousand kisses deep I loved you when you opened like a lily to the heat You see I’m just another ...

লর্ড অফ মিটিং রিভারস, বাসবন্ন

Image
আমাদের অতীতের সিন্দুকে কতকিছু লুকিয়ে আছে, তোরঙ্গে জমে থাকা দস্তাবেজের মতো, তীব্র আলোর ঝলকানির মধ্যে দু-একটি ক্ষীণ অপসৃয়মান বিন্দু, যা চোখে পড়ে না, অথচ এই বিন্দুগুলিই যেন শত-সহস্র বছরের ওপার থেকে অন্ধকারের মধ্যে পথচলার ভরসা দেয় দুঃস্বপ্নতাড়িত মানুষদের। আজকে যে কবির কথা বলবো তাঁর নাম বাসবন্ন (১১০৬-৬৮)। দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শতাব্দীতে খুব অল্প সময়ের জন্য মধ্যযুগের ভারতবর্ষের সামাজিক আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন এই মিস্টিক-সাধু। উত্তর কর্ণাটক-কে (ম্যাঙ্গালোর) কেন্দ্র করে প্রায় শ-তিনেক মাইল জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিলো এক ভক্তি-আন্দোলন, যে আন্দোলনের কেন্দ্রে ছিলো সব-কিছু-মিলিয়ে দেওয়ার একটা দুঃসাহসিক স্বপ্ন – আত্মপরিচয়, জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ সব বিলীন হয়ে একজন নিরীশ্বরের সাধনা। তার কবিতার কিছু অনুবাদ পাওয়া যায় রামানুজনের আশ্চর্য সব অনুবাদে, সেই বইটির নাম “স্পিকিং অফ সিভা’ – এই শিব কিন্তু মন্দিরের দেবতা নন, কোনো জাতির ঈশ্বর নন, তাঁর বর্ণনা বাসবন্ন করেছেন, ‘Lord or meeting rivers’, নদীসঙ্গমের প্রভু। কেন এনার কবিতা পড়ছি এখন সে গল্প বড়ো লম্বা, এই পরিসরের যোগ্য নয়, তবু এইটুকু বলা যেতেই পারে যে আজ প্রায় আটশো-নশো বছর পরে, আ...