জাস্ট অ্যানাদার স্নোম্যান
কথাটা হচ্ছিলো কোহেন-কে নিয়ে? সবথেকে প্রিয় গান কোনটি? ফেমাস ব্লু রেনকোট? হ্যালেলুইয়া? সো লং ম্যারিয়ান? ফেয়ারওয়েল ভ্যালেন্টিনা? কোনটা? যদি আজকেই ঠিক একটু পরেই ঢলে পড়ি মৃত্যুর মুখে, শেষবারের মত শুনতে চাইলে শুনবো কোনটা?
আসলে কোহেনের সব-সব গান বড়ো প্রিয়, সব গান-ই আসলে আমার। শ্রীজাত-রই একটা প্রিয়তম লাইন একটু পালটে আমার বলতে ইচ্ছে করে, "আজ থেকে সব মিথ্যে কথা তোমার হলো, যেমন আমার সব কান্নাই লেনার্ড কোহেন"। তাই একটা বাছা বাতুলতা, তাও ... গানটা হয়তো অনেকের শোনা, তাই কোহেনের গলায় আবৃত্তির ভিডিওটাই দিলাম - সেই ডার্ক কফির মত, বিগত জন্মের প্রেমের মতো, গভীর রাতলাগা কণ্ঠস্বর।
কোহেনকে চাক্ষুষ দেখা হলো না এ জন্মে, এ এক বড়ো আক্ষেপ। এক বন্ধুনি যে দেখেছে তাঁকে, বলেছিলো, স্টেজে উঠলেন কোহেন। ষাট বছরের বৃদ্ধ প্রেমিক কোহেন, গলা অল্প কাঁপে উঁচু তারে। কোহেন গাইছেন না, শুধু আস্তে আস্তে আবৃত্তি করছেনঃ
কী জাদু, কী মায়া, কী সম্মোহন সেই কথায় - এক হল্ভর্তি লোক যেন সেই মুহুর্তে প্রেমে পড়ে গেলো সেই বৃদ্ধ ভালোবাসার জাদুকরের।
এইসব শুনতে শুনতে মনে হয় হ্যাঁ সেই ভিড়ে আমিও ছিলাম, ছিলাম না? মনে হয় আমরা যারা কাছে আসবো বলে দূরে পালাতে চেয়েছি, কোহেন তাদের একান্ত ঈশ্বর।
মনে হয়, শুধু আমাদের জন্যেই একটা অবুঝ চোরাগলির ঠিকানা রেখে গেছেন তিনি।
শুধুই আমাদের জন্যে? হয়তো না, হয়তো সব অন্ধকার হয়ে যাওয়ার পরে, ওই দূরের একটা বাড়ির কংকালের গায়ে যে টিমটিমে আলো জ্বলে,
আর প্রেমহীন নিস্তব্ধ ছাদে একা-একা দোল খায় যে আধপোড়া সিগারেট, তাদের জন্যেও।
কোহেনের কবিতা নিয়ে কখনো সাহস হলে লিখবো অনেক কিছু। যদিও সাহস হবে না জানি। তবে একটু যখন লিখেই ফেলেছি ঝোঁকের মাথায়, একটা চিঠি দিয়ে শেষ করি ...
এই চিঠিটা লেখা ম্যারিয়ান-কে, আজীবন যাকে ভালোবেসেছেন, যিনি মিউজ ছিলেন (মিউজের বাংলা কি, ফয়েজ?), সেই ম্যারিয়ান, So long marianne-এর ম্যারিয়ান।
“Well Marianne it’s come to this time when we are really so old and our bodies are falling apart and I think I will follow you very soon. Know that I am so close behind you that if you stretch out your hand, I think you can reach mine. And you know that I’ve always loved you for your beauty and your wisdom, but I don’t need to say anything more about that because you know all about that. But now, I just want to wish you a very good journey. Goodbye old friend. Endless love, see you down the road.”
চিঠিটা যবে লেখা, সেই ২০১৬তেই রেনবো ব্রিজ পেরিয়ে দৃশ্যের ওপারে চলে যান কোহেন। মৃত্যুর পদধ্বনি শুনতে শুনতে এইটুকুও যদি ভালো বেসে যেতে পারি আমার ম্যারিয়ান-দের, তার বেশী আর কেই বা কী চায়?
Comments
Post a Comment