Posts

Showing posts from 2020

ইতি ও পুনশ্চ

  বছর দুই হলো একতলার বাসা ছেড়ে দোতলায় উঠেছি , সামনে এখন কোনো উঁচু বাড়ি নেই , তাই দৃষ্টি অনেকদূর যায় বাধাহীন। তবে সেই দৃশ্যে শুধুই রুক্ষ , অযত্নে লালিত অনেকখানি জংলা জায়গা , যার একদিক থেকে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছে ছোট্ট , ছোট্ট নতুন দেশলাই বাক্সের মতন বাড়িঘর। আজ থেকে আর সপ্তাহ তিনেক পরেই যদি এসে ব্যালকনিতে বসেন একটা চেয়ার টেনে , হেমন্তের শেষ পাতার ফাঁক দিয়ে হুই দূরের একটা হাইওয়ের একটু আলো দেখা যাবে রাতে , আর ক্রমে ক্রমে কমে আসা জঙ্গলের যেদিকটায় আলো পড়ে না , সেইখান থেকে শোনা যাবে পাখির ডাক , ক্কচিৎ দুই-একটা খরগোশ কিংবা হরিণের আওয়াজ। কোত্থাও কোনো হর্ণ নেই , কোনো সাইরেন নেই , চারিদিকে তাকিয়ে দেখি , আর কোথাও কেউ ব্যালকনিতে শীতের রাতে একা-একা দাঁড়িয়ে নেই।   মনে হয় এই নিস্তব্ধতা এতোই গাঢ় , এতোই তরল , যেন চোখ বুজে কান পাতলেই বহু দূর থেকে চেনা স্বর এসে পৌঁছবে কানে। যেন এই ডানা-ঝটপটানো রাতে একদিন হঠাৎ-ই ফোন আসবে সেই ইচ্ছে করে সেভ না করা নম্বরটা থেকে , এবং সে জিগ্যেস করবে , ' জেগে আছিস ?'   *****   বাবার কাছে চিঠি আসতো প্রচুর। পুজোর ঠিক আগে আগে আমাদের ছোট্ট কাঠের ডাকবাক্স ভ...

ছাদের গান

এই অঞ্চলের গ্রীষ্মকালের রাতগুলি বাষ্পহীন, মেঘহীন এবং নিঃশব্দ। সামনের একটা মাঠ ছাড়া চোখের সীমানায় কোথাও আলোর কোনো উৎস নেই, খালি দূরে হাইওয়ে যেন জ্বলন্ত আংরার শেষ আভাটুকু হয়ে ফুটে থাকে। এই রাত্রের অন্ধকারের মধ্যে মিশে বসে থাকি রোজ, মাথার উপরে তাকিয়ে খুঁজতে থাকি বাল্যবন্ধুর মতো চেনা তারামন্ডল - লুব্ধক চিনতে পারি, চিনতে পারি কালপুরুষের কোমরবন্ধনী, জিজ্ঞাসাচিহ্নের মত হাতড়ে হাতড়ে খুঁজি সপ্তর্ষিদের -- পুলহ, পুলস্ত্য, অত্রি, অঙ্গিরা ... আর? নামগুলো মনে পড়ে না আর, শুধু মনে পড়ে আগের জন্মের শহরে ফেলে আসা একটা অলৌকিক ছাদ আর সে ছাদের কোণায় কোণায় জমে থাকা ধুলোর মত ময়লা একটুকরো ছেলেবেলার গল্প ...  এই ছাদটা কিন্তু আসলে আমাদের নয় ... সত্যি বলতে আমাদের কোনোদিন-ই ছাদ ছিলো না, মাথার উপরে তাও যা ছিলো নাম-কা-ওয়াস্তে, পায়ের তলায় সর্ষে বই আর কিচ্ছু ছিলো না... কিন্তু তাতে কী? জীবনে যা কিছু আমাদের অধিগত নয়, শুধু তাই নিয়েই তো গল্প লিখি আমরা, তাই না? এও, তাই একরকমের আনরিক্যুইটেড লাভস্টোরি ... আর সেই প্রেমের গল্পের মুখ্য চরিত্র আমাদের ভাড়াটে বাড়ির মাথার উপরের এক চিলতে একটুখানি ছাদ।  *** একটা লম্বা-চওড়া-...

উজু !

এই গভীর, গভীরতর অসুখের মধ্যে বসে বসে মাঝে কলেজের টুকরো-টাকরা গল্প মনে পড়ে ... দু-একজন পুরোনো বন্ধু, যাদের সাথে অনেকদিন দেখা নেই ... এখন শনিবার-শনিবার সকালে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনলাইন হচ্ছি সবাই, কারুর সকাল, কারুর বিকেল, কারুর চোখ ঘুমে ঢুলছে ... ছোট্ট ছোট্ট বাক্সের মধ্যে চেনামুখ গুলো দেখি আর ভাবি এই বন্দীদশা শেষ হলে সবার সাথে একদিন দেখা করবোই যাহোক করে ... বাক্সের ভেতরে-বাইরে সব্বাই ... সেইরকম এক-একজনের গপ্পো বলবো এক-একদিন... আজকের যে হিরো, তার নাম উজু, উজু চেয়েছিলো ফিজিক্স পড়বে, এদিকে বাড়ির লোকে জোর করে ঢুকিয়ে দিলো স্ট্যাট পড়তে, শেষমেশ অবশ্য স্ট্যাটের পাট চুকিয়ে উজু কম্পিউটেশনাল ফিজিক্স-এই কাজ করেছে, এখন ডক্টরেট শেষ করে চাকরি করছে কোথাও ...  তা সেই কলেজে পড়ার সময় থেকেই একটা জিনিষ খুব স্পষ্ট ছিলো, এই আগাপাশতলা রিগ্রেশন টুওয়ার্ডস মিনের রাজত্বে উজু একটি জ্বলজ্বলে আউটলায়ার ! যাইহোক, উজুর প্রথম কেরামতি দেখতে পেলাম ফার্স্ট ইয়ারে - পিসি (না উনি নন, আরেকজন) ক্লাসে অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছেন স্টক মার্কেটের দৈনিক ওঠানামার মধ্যে কিছু একটা প্যাটার্ন খুঁজতে হবে - আর ডেটা জোগাড় করতে হবে ...

"ফলিবেই ফলিবে" ...

এই যে পাবলিক হেলথ - এর প ' ও না জানা পাবলিক উদুম ডিপ লার্নিং আর কার্ভ ফিটিং করে রোজ সকাল - বিকেল দশটা কোভিড - ১৯ ফোরকাস্টিং এর মডেল নামাচ্ছে , এ দৃশ্য দেখেই ইহজগত-কে টাটা করতে হবে মনে হচ্ছে ! যে দিকে জিনিষ যাচ্ছে তাতে অনিশ্চয়তা ( আন্সার্টেনটি ) কিছুদিন পরে উঠেই যাবে , রাস্তার মোড়ে মোড়ে দোকান হবে মাতৃ মেশিনলার্নিং স্টোরস কিংবা বগলার ব্যাকপ্রপ কর্ণার , উপরে সাইনবোর্ড ঝুলবে “ সব জ্যোতিষী বারবার , ডিপ লার্নিং একবার” ... সে যাই হোক , এই প্যানডেমিক মডেলিং - এর হিড়িক দেখে একটা সদ্য - যৌবনের গল্প মনে পড়ে গেলো ! আমার আই - এস - আই - এর প্রাণের বন্ধু মাতাল ( ভালো নাম গোপন ...