আমার কথা
আমার সব লেখাই আত্মজৈবনিক - যেন হঠাৎ হঠাৎ মনে পড়ে যাওয়া এক-একটা ছোট্ট চিরকুট, সাদা শার্টে একটা ছোট্ট পুরোনো দাগ যেটা ধুয়ে ধুয়েও কি করে যেন রয়ে গেছে, তাই আলাদা করে আমার কথা লিখতে বসে বড্ড গোলমাল লাগছে! আসলে কিসের পরে কি ছিলো জানিনা, শুরুতে কি ছিলো? জল না আগুন? না অন্ধকার? শেষে কি আলো থাকবে? এসব বোধহয় আমাদের সিলেবাসে ছিলো না ! সিলেবাসে কী ছিলো তবে? ছিলো একটা রঙচটা নাইলনের বাজারের থলে – আজ-ও সেটা উল্টোলেই একটা দুটো পেয়াঁজের খোসা কোত্থেকে ঠিক বেরিয়ে পড়বে, সেইরকম কতগুলো জিনিষ কেমন করে যেন আলগা হয়ে লেগে থাকে আমাদের সাথে, কবে এসেছিলো জানিনা, আবার কোনদিন ঝাড়তে গিয়ে বেরিয়েও যাবে, এই দু-একটা স্মৃতি সেই দু-একটা উড়ে যাওয়া কুটো ! ছোটবেলার কথা ভাবলেই মনে পড়ে লোডশেডিং – বিষ্যুদবার সাতটা পয়ঁতাল্লিশে শুরু হতো চিত্রহার,ঠিক আট-টায় কারেন্ট চলে যেতো ! অন্ধকার বারান্দায় দুই ভাই-বোন বসে গলা ছেড়ে গাইতাম, “আলো আমার আলো ওগো, আলো জীবন ভরা” ... লন্ঠণ জ্বালিয়ে দিয়ে যেতেন মা, আর আমাদের আকুল আলোর ডাকে কুপির শিস উঠতো উপর দিকে কেঁপে-কেঁপে, সে ডাক শুনে আলো-ও কি ক্রমে আসতো সে ছোট্ট ঘরে? মনে নেই, তবে জল আসতো খুব...