এ্যাই সম্পর্কে - ১

 ডিঃ অর্থাৎ ডিস্কেলেইমার, আমি কিন্তু এ্যাইফোবিক নই, অর্থাৎ এ্যাইকে আমি ভালো না বাসলেও বিলক্ষণ ভয় খাই, ওরেব্বাবা। দেখুন্না, এ্যাই আমাদের ছবি এঁকে দিচ্ছে, কবিতা লিখে দিচ্ছে, ভিডো বানিয়ে দিচ্ছে, গানও গেয়ে দিচ্ছে। ছাত্রদের দিতেছে ত্রৈরাশিক আর অর্ডিনারি ডিফেকের সলুশন আর শিক্ষকদের দিচ্ছে পাইকিরি খাতাদেখার কল, ইদিকে হিজলদাগড়াদের একহাতে দিচ্ছে ভাবসম্প্রসারণ মার্কা পেপার, অন্যহাতে দিচ্ছে সারাংশ মার্কা পিয়ার-রিভিউ, যদিও প্রথমটি এখন সহনীয়ের খাতায় ঢুকে গেলেও, দ্বিতীয়টি আছে গোপোনে। এ্যাই-ই গাইছে, এ্যাই-ই লিখচে, এ্যাই-ই সেই দেখে মুগ্ধ হয়ে হাততালিও দিচ্ছে। আমরা সেই হাততালি দেওয়া দেখে যৎপরোনাস্তি মুগ্ধ ও বিমূঢ়।

প্রাজ্ঞ লোকেরা বলছেন সব-ই পালটে যাবে, নতুন নতুন দিগন্ত খুলে যাবে, এতো লোকে বলছেন যখন যাবে নিশ্চয়ই, তবে এরকম লাস্ট বলেছিল আনন্দলোক পত্রিকা। সিঁথির মোড়ে অ্যাইয়াব্বড়ো সাইনবোর্ড দেখেছিলাম অটো থেকে নেমেই, "উল্টে দেখুন পাল্টে গেছে"। সে অবশ্য আর দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া।
তবে যা করছে করুক গে যাক। আমি মনের আনন্দে কঠিন অঙ্কটঙ্ক কষার চেষ্টা করছি, সেসব এ্যাইয়ের সিলেবাসের বাইরে, বই পড়ছি অনেকানেক, ক'দিন পরে সেমিস্টার শুরু, তার সচিত্র নোটসমূহ বানাচ্ছি। মাঝেমাঝে উটকো র্যান্ট আসছে, গিলে ফেলছি। আর সত্যি বলতে, অনেক ভেবেটেবে দেখলাম সবকিছুর পরেও কিছু কিছু জায়গায় হয়তো হিউম্যান কানেকশনের বিকল্প নেই। বহুদিন আগে নাটক করার সময় মনে হয়েছিল, থ্রি-ডাইমেনশনের নাটক সামনে থেকে না দেখে পরে ঐ টু-ডাইমেনশনের ভিডিও দেখে কিছুতেই মন ভরে না। স্কুলকলেজের বন্ধুদের সাথে যুম করতে করতে কোনো এক রোববার মনে হয়েছিল ভার্চুয়াল জগতে বিড়ির কাউন্টার নেওয়া যায় না। যায় না, এখন বুঝি। কিছু ফাঁকফোঁকর থেকে যায়, অতীত আর ভবিষ্যতের মধ্যে।
সেইসব ফাঁকফোঁকরে অদৃশ্য ধুলোবালির মত ঢুকে যেতে চাই আমি, থেকে যেতে চাই আমি।



Comments

Popular posts from this blog

কামাই

যে ভাষায় আমের নাম ...