এই চারটে কবিতার এক-ই শিরোনাম 'এপিটাফ'। চারজন খ্যাতনামা কবির - ভাস্কর চক্রবর্তী, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, জয়দেব বসু এবং নির্মলেন্দু গুণ। এর মধ্যে শেষজনের যে কবিতাটি দিয়েছি তার শেষ লাইন নিয়ে সামান্য সন্দেহ আছে, "কবর" না "কররেখা" - আমার কাছে বইটি নেই, নেট/সোশ্যাল মিডিয়ায় দুইরকম।
সে যাইহোক, আগে চারটে কবিতা পরপর দিই।
১) ভাস্কর

২) শক্তি

৩) জয়দেব
৪) নির্মলেন্দু (এর-ই শেষ পংক্তিটি নিয়ে সন্দিহান)
এগুলো একত্র করার কোনো কারণ নেই সেভাবে, হঠাৎ উটকো খেয়াল ছাড়া আর বিশেষ কোনো চালিকাশক্তি এমনিও নেই। তবে, একটা অন্য কথা বলি এই সূত্রে।
আজকে একটা প্যারাডক্সের বই পড়ছিলাম (Gábor Székely - Paradoxes in Probability Theory and Mathematical Statistics)। প্যারাডক্স যে আমার এমনিও ভারী প্রিয় বিষয় সে তো বলাই বাহুল্য, তার-ই একটা খুঁজছিলাম। খুঁজতে খুঁজতে মনে পড়লো সেই বইয়ের শেষ প্যারাডক্স - অ্যালফ্রেড রেনির একটি উক্তি। আমি একটু অপটু অনুবাদের অপচেষ্টা করি। রেনি বলছেন যে কীভাবে মাত্র এক লাইনের একটি কবিতায় কত কিছু ধরা থাকে, যা ঐ এক-ই দৈর্ঘ্যের টেলিগ্রামের থেকে অনেক বেশি 'তথ্যসমৃদ্ধ'। এবং বলছেন, কবিতার এই আশ্চর্য গভীরতা যেন ইনফর্মেশন থিয়োরির নিয়মের ঠিক উলটোপথে চলে। এই আপাতবিরোধের চাবিকাঠি, রেনি-র মতে, ‘অনুরণন’ (resonance)। কবিতা তো শুধু তথ্য-উপাত্ত নয়, কবিতা আমাদের অন্তরের কোনো এক তন্ত্রীতে এমন ঢেউ তুলতে পারেন যার রেশ পৌঁছে যায় গভীরে, অবচেতনের স্তরে। কবিতা, তাই পৌঁছে যেতে পারে চিন্তাসূত্র ধরে, আবেগ, অথবা স্মৃতির প্রতিধ্বনিতে। এবং সেই দিক থেকে দেখতে গেলে, কবিতা একরকমের ম্যাজিক বৈকি।

রেনি'র উক্তিটা পড়তেই পড়তেই মনে পড়ল আমার পড়া অন্তত দুটো অসম্ভব প্রিয় এবং হ্রস্বতম কবিতা, যার একটি ভাস্করের, উপরেই। আর অন্যটি মারউইনের। নিচে। মারউইনের অবিচুয়ারিতে এইটিকে বলা হয়েছিল, 'দ্য শর্টেস্ট গ্রেট পোয়েম'। গ্রেট কি না সে আমার এক্তিয়ারের বাইরে। তবে, শোকসন্তপ্ত অবস্থায় এই একটি লাইন ফিরে ফিরে এসেছে বহুবার। যে শূন্যতা থেকে কোনো শব্দই আর ফিরে আসবে না, তার সামনে দাঁড়িয়ে মনে হয়েছে, এর পর, এরপর? সত্যিই গভীর, গভীরতর শোকের সামনে পাথর হয়ে যাওয়া ছাড়া মানুষের কিচ্ছু করার নেই।
--
Comments
Post a Comment