একজনের প্রোফাইল থেকে একটা ছবি ঝেঁপে তাদের অপরাধী বলে দাবী করে একটা মিথ্যা গুজব বানিয়ে ছড়াতে লাগে এক মিনিটের-ও কম, আর সেইটা ভুল প্রমাণ করতে লেগে যায় একাধিক দিন, বা আরও বেশি। আমার উক্তি না, প্রতীক সিনহার, আজকেই ট্যুইট করেছেন একটি প্রতিবেদন শেয়ার করে।
পড়ে যা বুঝলাম, দিন পাঁচেক আগে, অর্থাৎ ১৫ তারিখ হিন্দুত্ব-নাইট (@HPhobiaWatch) নামে একটা কট্টর দক্ষিণপন্থী হ্যান্ডেল আর্শিয়ানের আর একজনের (গোলাম আজ়ম) ছবি দিয়ে ট্যুইট করেছিলেন। যার বক্তব্য যে এই দুজন "অভিযুক্ত"-কে আড়াল করছে সরকার। সেইটা ভাইরাল হয় মূহূর্তেই। ১০ লাখ ভিউ, হাজার সাতেক রিটুইট। তারপর ঐ হ্যাণ্ডেল ক-পুর নোটিশ খেয়ে সেটা নামাতে না নামাতে ঐ এক-ই জিনিষ আরেক দাগ চড়িয়ে টুইট করেছিলেন আরেক কুখ্যাত রাইট উইং ট্যুইটার পার্সোনা - মধু কিশওয়ার। এইবার শুধু মিথ্যেই নয়, সঙ্গে সাংঘাতিক ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্য। সে এমন জঘন্য জিনিষ যে আমি চেষ্টা করলেও অত নোংরা জিনিষ টাইপ করতে পারবো না নিজের হাতে। ওঁকেও কপু নোটিশ ধরিয়েছে কি না, ধরালেও বা উনি আদৌ সেসবে ডরান কি না জানি না। কারণ, সেই ট্যুইট-টাও এখনো দিব্যি ঝুলছে ওঁর প্রোফাইলে। সার্চ করলেই পাবেন, প্রতিবেদনেও স্ক্রিনশট দেওয়া। এই পোস্ট-টা লেখার সময় সেটার ভিউ ২৫০.৪ হাজার।
অল্ট-নিউজ়ের টিম অনেক পরিশ্রম করে খেটেখুটে প্রমাণ জোগাড় করেছে যে আর যাই হোক না কেন ঐ ঘটনার সময় আর্শিয়ান বাড়িতেই ছিলেন। কী করে ভেরিফাই করেছেন সেই বৃত্তান্ত খবরেই পড়ে নিন।
তবে তার আর দৌড় কদ্দূর বলুন? একে তো ইংরেজিতে লেখা, ক'জন পড়বেন? নগণ্য। যারাও বা পড়বেন তারা কি আর টাইম মেশিনে গিয়ে পুরোনো পোস্ট মুছে আসবেন? বা, অন্তত, নিজের বিবেকের কাছে পরিস্কার থাকতে পাবলিক স্পেসে ক্ষমা চাইবেন ঐ ছাত্রটির কাছে? চাইবেন না। কিস্যু করবেন না। অবশ্য চাইলেও কিছুই কি বদলে যেতো? কোন হঠকারিতার মাশুল কি, এসব ভাবতে গেলে আর গোয়েন্দা ফেবুদার রহস্যরোমাঞ্চ মারানো হয় না।
তাই এইসব চলবে। চলতেই থাকবে। চলতে চলতে একদিন দেখা যাবে একজন মানুষের কাছে আর সত্যের কোনো প্রয়োজন থাকবে না, তার অস্তিত্বের শেষ টুকরোটুকুও তখন চলে যাবে সর্বময় কর্তা বা কর্ত্রীর জিম্মায়। আর তখন, ঠিক তখন-ই সে পরিণত হবে একটি আদর্শ ও এফিশিয়েন্ট যন্ত্রে, কারণ তখন সে কটিমাত্র বস্ত্রাবৃত হইয়াও যে কোনো মিথ্যার কাছে সম্পূর্ণ বলিপ্রদত্ত।
এটাও ঠিক আমি বলিনি। বলেছেন হ্যানা আরেণ্ট।
"This constant lying is not aimed at making the people believe a lie, but at ensuring that no one believes anything anymore.
And such a people, deprived of the power to think and judge.. such a people, you can do whatever you want."
No comments:
Post a Comment