লটারি, যুদ্ধবিমান আর ক্লিওপেট্রার আতঙ্ক - যে ভুল কোনোদিন শুধরোয় না !

(১) 

এয়ারপোর্টের বুকস্টলে দু-মিনিট দাঁড়ালেই একতাক ভর্তি হিতোপদেশের বই দেখা যাবে, টেন হ্যাবিটস অফ মারকাটারি সাকসেসফুল পিপল, অথবা দ্য ঝুঁটিকাকা হু ফেইলড হিজ ওয়ে টু দ্য টপ। 

এমন-ই একটি বই 'গুড টু গ্রেট', ২০০১ সালের লেখা, জিম কলিন্স, নামকরা আমেরিকান ফিনান্সিয়াল কনসাল্ট্যান্ট। লেখক সেখানে প্রায় হাজার দেড়েক কোম্পানির থেকে বেছে নিয়েছেন এগারোটি সবথেকে সফল কোম্পানি, তাদের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য গুনেগেঁথে টোটকা দিয়েছেন সাফল্যের চাবিকাঠির। বই বিকিয়েছে 'লাইক হট কচৌরিস' ... কিন্তু তবুও, তবুও এই "অ্যানালিসিস", আসলে শুধুই খুব-ই মুষ্টিমেয়ের ইতিহাস, আসলে সারশূন্য ! যে চাবিকাঠি দিয়ে একটি সাফল্যের দরজা খুলে গেছে একজনের জন্য, অন্য একশো জনের জন্য হয়তো সেই দরজার ওপারে ছিলো খাদ ... পার্থক্য এই যে সেই একশোজনের গল্প আমাদের কান অব্দি পৌঁছয়নি, আমরা শুধুই ফোকাস করেছি যাঁরা সফল হয়েছেন, ভাগ্য, চেষ্টা অথবা অন্য কোনো কারণে শেষ অব্দি পেরিয়ে এসেছেন মাঠের শেষ অব্দি ... তাও হয়তো নয়, জিম কলিন্সের সেই গ্রেট এগারোখানা কোম্পানির মধ্যে ছখানা কোম্পানি-ই ক্ষতি করেছে বেশ কিছু, গড়ের থেকে নীচে চলে গেছে তাদের লাভের অঙ্ক ... 

r/LateStageCapitalism - Survivorship Bias


অবশ্য এয়ারপোর্টে না গিয়ে বিখ্যাত লোকের সাক্ষাৎকার শুনলেও চলে, বাড়ি থেকে বেরোনোর হ্যাপা নেই। স্টিভ জবস-এর গল্প গোটা দুনিয়া জানে, কলেজ ড্রপ-আউট করে বন্ধুকে নিয়ে গ্যারেজে খুলে ফেললেন একটা কোম্পানি, যা একদিন হয়ে যাবে "a ding in the universe" ... জুকারবার্গের গল্প-ও কাছাকাছি, আর এই যে গল্পটা আপনি পড়ছেন, সেটাও কি সম্ভব হতো, যদি না তিনি হার্ভার্ড ছেড়ে দিয়ে নিজের নতুন সোশ্যাল নেটওয়ার্কের সাইট-টিকেই নিয়ে পড়ে না থাকতেন? 

অথচ, আমি-আপনি দিব্যি জানি একজন স্টিভ জবসের পাশাপাশি একশোজন জবলেস (সংখ্যাটা বেশীই হবে) আছেন যাদের প্রতিভা কিচ্ছু কম ছিলো না, শুধু তারা সাফল্য পাননি, কোনো একটা কারণে যা আমাদের অধিগত নয়। একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট কোম্পানি (সম্ভাবনাময় স্টার্ট-আপ দের যাঁরা মূল্ধন যোগান) ক্যালকুলেট করে দেখেছেন, আমেরিকার একটি স্টার্ট-আপের গ্যারেজ থেকে শুরু করে আইপিও (অর্থাৎ ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং) অব্দি পৌঁছনোর চান্স মাত্র ১৩% এর আশেপাশে। 

ব্যাপারটা তো জলের মতন সহজ, তবুও ভুল তো লোকে করে, এয়ারপোর্টের বুকস্টল-ই বলুন আর কৃতী ছাত্রদের সাক্ষাৎকার, মানুষ শোনে তো মন দিয়ে সেই সব টোটকা আর ভাবে এই তো সকাল পাঁচটায় উঠে চিরতার জল খেলেই আমিও আজ ফেরারি-বেচা মঙ্ক ... ভুলটা তাহলে কোথায়? 

ভুলটার নাম সার্ভাইভার বায়াস। শুধুমাত্র সফল উদাহরণগুলিই দেখলে মনে মনে যে ছবিটা আঁকা হয় সেটা সত্যিটার থেকে এক পোঁচ বেশী উজ্জ্বল, ব্যর্থতার মলিনতা তাকে যে বাস্তবের মাটিতে দাঁড় করায় সেটা অস্বীকার করার মাশুল কম কিছু নয়। 

বিশেষ করে সেই মাশুল যদি হয় মানুষের প্রাণ ! 

(২)

প্রাণের মাশুল অর্থাৎ যুদ্ধ । 

সেই গল্প করার আগে পরিচয় করিয়ে দিই, এই গল্পের সবথেকে বর্ণময় চরিত্রটির সাথে, যাঁর নাম আব্রাহাম ওয়াল্ড - রাশিবিজ্ঞানের জগতে যাঁর তূল্য প্রতিভা কজন এসেছেন হাতে গুনে বলা যায় বোধহয় ! ওয়াল্ডের জন্ম ১৯০২ সালে, তৎকালীন ট্রান্সিল্ভ্যানিয়ায়, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের শেষদিকে। ধর্মপরায়ণ একটি ইহুদি পরিবারের ছেলে ওয়াল্ড ইস্কুলের পাঠ নিয়েছিলেন বাড়িতেই বাবা-মার কাছে, তারপর সোজা কলেজের পাট চুকিয়ে ভিয়েনায় অধ্যাপনার চাকরি নেন। ব্রিলিয়ান্ট গবেষক, কিন্তু ততোদিনে অস্ট্রিয়ার ইহুদিদের উপরে শুরু হয়েছে ভয়ানক অত্যাচার, নাৎসিজমের কালো মেঘ প্রায় ঢেকে ফেলেছে ইয়ুরোপের অস্তমিত সূর্য। ওয়াল্ড ১৯৩৮ সালে চলে এলেন আমেরিকায়, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে, অর্থনীতির অধ্যাপকের চাকরি নিয়ে। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় এর পরেপরেই, ওয়াল্ড সেইসময় যোগ দেন Statistical Research Group (SRG)-তে, সামরিক কৌশলের সাথে বৈজ্ঞানিক চিন্তার সূত্র খুজঁতে। 

আমেরিকান মিলিটারির প্রধান শিরঃপীড়া তখন যুদ্ধবিমানের ক্ষয়ক্ষতি। মিলিটারি কর্তারা দেখলেন যে যুদ্ধবিমানগুলো ফিরে আসতে পেরেছে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে, তাদের বেশীরভাগের-ই সবথেকে বেশী বুলেটের গর্ত দুই ডানায় আর ল্যাজে, অথচ ইঞ্জিনগুলি প্রায় অক্ষত। (বুলেট হোলের ম্যাপটি খানিকটা নীচের ছবিটি দেখলে আন্দাজ পাওয়া সম্ভব)! মিলিটারি কর্তারা ভাবলেন, এর একমাত্র অর্থ দুই ডানা আর ল্যাজ-ই দুর্বল জায়গা, অতএব ওইগুলি-ই আরো শক্তপোক্ত করা উচিত ... 

ওয়াল্ড এইসময় লিখলেন তাঁর উপদেশ। কর্তারা যা বলেছেন, তার ঠিক উলটো - ডানা/ল্যাজের আর্মার বাড়িয়ে কাজ নেই, বরং ইঞ্জিনের আর্মার বাড়ালে উপকার হবে। 

 

বম্বার বিমানে বুলেট-হোলের (কাল্পনিক কিন্তু বাস্তবানুগ) ম্যাপ, উইকিপিডিয়া থেকে

ওয়াল্ড যেটা বুঝেছিলেন, আর কর্তারা বোঝেননি, সেই অদৃশ্য এফেক্টটির নাম সার্ভাইভার বায়াস। ওয়াল্ড বলেছিলেন, মিলিটারি-কর্তারা শুধু সেই এয়ারক্র্যাফটগুলিই দেখছেন যেগুলি মিশন থেকে ফিরেছে প্রাণ বাঁচিয়ে, অর্থাৎ সার্ভাইভ করেছে যেগুলি । 

যে বোমারু বিমানগুলি গুলির আঘাতে ধ্বংস হয়েছে, অথবা হারিয়ে গেছে, সেগুলির কোনো তথ্যই পাওয়া সম্ভব নয়। আরেক ভাবে বললে, বুলেট হোলের ম্যাপ যা দেখাচ্ছে তা বিমানের দুর্বল অংশ নয়, উলটে এমন অংশ যেখানে বুলেটের ক্ষত নিয়েও ফিরে আসতে পেরেছে সেই বম্বারগুলি। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মার্কিন যুদ্ধবিমানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিলো অপরিসীম, ৮৮০০০ বোমারু বিমান হারিয়ে যায় বা নিখোঁজ হয় মিলিটারি ক্যাম্পেইনে গিয়ে - ওয়াল্ডের উপদেশ না মানলে সেই সংখ্যাটা কোথায় যেতো তা ভাবতেও আঁতকে উঠতে হয়। 

(আব্রাহাম ওয়াল্ডের আরোও অনেক গল্প ্লেখার বা বলার আছে, সময় পেলে সেসব হবে কখনো। শুধু এই যুদ্ধকালীন গবেষণার খুঁটিনাটি নিয়েই কত গল্প করা যায়। এই অসম্ভব প্রতিভাবান বৈজ্ঞানিকের অকাল্মৃত্যু হয় মাত্র আটচল্লিশ বছর বয়সে, ভারতে বেড়াতে এসে নীলগিরি পর্বতের কাছে বিমান দুর্ঘটনায়। মৃত্যু না হত্যা, সেই নিয়ে কিছু রহস্য এখনো রয়ে গেছে। এটাও বলে রাখা যায়, ওয়াল্ড পৃথিবীর একমাত্র বিজ্ঞানী নন যিনি রহস্যজনকভাবে বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হয়ে যান।)

(৩)

সার্ভাইভার বায়াসের উদাহরণ কিন্তু চারিদিকে চোখ মেললেই বিস্তর প্রাঞ্জল দেখতে পাওয়া যায়। 

ওয়াল্ডের আগেই, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যেমন। ব্রডি হেলমেটের প্রচলনের পরেই দেখা যায়, যেসব সৈনিক ওই হেলমেট-টি পরে যুদ্ধে গেছিলেন, অনেকেই মাথায় গুরুতর চোট নিয়ে ফিল্ড হাস্পাতালে ভর্তি। আর্মির লোকে ভেবেছিলেন নিশ্চয়ই পিথ হেলমেটের ডিজাইনেই কিছু গণ্ডগোল আছে, যতক্ষণ না একজন স্ট্যাটিশটিশিয়ান শুধরে দেন। ব্রডি হেলমেট মাথায় পরা সৈনিকরা তাও তো হাসপাতালে পৌঁছেছেন, যারা পরেননি মাথায় শ্র্যাপনেলের আঘাতে তাদের ভবলীলা সাঙ্গ হয়েছে যুদ্ধের মাঠেই। 

আরো অনেক অনেক আগে পিছিয়ে যাওয়া যায়। ভিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতে পম্পেই ধ্বংস হয়ে গেছিলো ৭৯ খ্রীস্টপূর্বাব্দে। লাভাস্রোতের তলায় চাপা পড়া পম্পেই-এর ধ্বংসাবশেষ থেকে যে কঙ্কাল পাওয়া যায়, তাদের করোটি এবং দাঁতের গড়ন থেকে ঐতিহাসিকরা সিদ্ধান্ত করেন রোমান সাম্রাজ্যে সবার দাঁত নিশ্চিত খুব খারাপ ছিলো, দোর্দণ্ডপ্রতাপ রোমানদের মুখে যে দুর্গন্ধ হতো সে কথা প্রায় প্রচলিত রসিকতা হয়ে গেলো সময়ের সাথে সাথে। শেক্ষপীরের লেখায় দেখি, রাণী ক্লিওপেট্রার সবথেকে বড়ো ভয় ছিলো রোমান প্রেমিকের দন্তরুচির গন্ধ, ("in their thick breaths, / Rank of gross diet, shall we be enclouded, / And forced to drink their vapour?")। ওভিডের আর্ট অফ লভ-এও দেখি উপদেশ দিয়েছেন, একটিও দাঁত কালো থাকলে প্রেয়সীর সামনে দন্তপাটি না ক্যালানোই শ্রেয়। 

বলাই বাহুল্য, আমাদের থেকে প্রাচীন রোম্যান-দের দাঁত যে একটু হলেও বেশী খারাপ ছিলো সে নিয়ে সন্দেহ নেই, কারণ হাজার হোক তাদের টুথপেস্টে নুন ছিলো না। কিন্তু ঐ যে ঐতিহাসিক-রা পম্পেই-এর করোটি দেখে ভাবলেন সবার দাঁত পচা? সেইটেও আসলে সিলেকশন বায়াস। অগ্ন্যুৎপাতে যাঁরা পালাতে পারেননি, সেই বৃদ্ধ-অশক্ত লোকের দাঁতের গড়ন দেখেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। পরের দিকে লোকে দেখেছেন, খারাপ ছিলো বটেই, তবে বয়সের তুলনায় আর পাঁচ জায়গায় যেমন ছিলো তেমনি, আলাদা কিছু নয়। 

শুরু করেছিলাম ওয়াল স্ট্রীট গুরুদের টোটকা-বইয়ের কথা বলে, সেই একটি শাখায় সার্ভাইভার বায়াস এতোই প্রচলিত যে এই ২০২০ সালেও দেখছি একের পর এক সায়েন্টিফিক এক্সপেরিমেন্ট ভুল প্রমাণিত হচ্ছে, শুধু এই একটি গ্যাঁড়াকলের জন্য। সবটাই যে অজ্ঞতা তা নয়, যেই এক্সপেরিমেন্টেই সাবজেক্ট-রা ভলাণ্টিয়ার করেন, সে ডায়েট হোক, দৌড় হোক ... সেখানেই একরকমের সিলেকশন বায়াসের সম্ভাবনা থাকে, তবে এও ঠিক যে এইসব বায়াস থেকে বাঁচার উপায় স্ট্যাটিশটিশিয়ান-রাই বের করে গেছেন। লোকে তাদের কথা শোনে কম, সে এক অন্য কথা। 

শেষ করবো দুটি কথা বলে। 

প্রথমটা করোনাভাইরাস নিয়ে মিস-ইনফর্মেশন, বিভ্রান্তি। যেখানে যতো সার্ভাইভাল রেটের ক্যালকুলেশন দেখছেন, বিশ্বাস করুন প্রায় সব-ই সত্যিকারের রেটের থেকে একটু হলেও বেশী, অর্থাৎ অপটিমিস্টিক। কারণ প্রথমতঃ, প্রচুর লোকে কোভিড টেস্ট না করেই অন্যান্য কারণে মারা যাবেন, যাচ্ছেন, ভাইরাসের ডেথ কাউন্টের হিসেবে তারা পড়েন না, পজিটিভ হোন বা না হোন। আর দ্বিতীয়টি তো শাসকরা অপব্যবহার করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিলেন, যদি টেস্ট-ই না করা হয়, কাউন্ট বাড়বে কেমনে? 


আর দ্বিতীয়টা এই যে পৃথিবীতে যেখানে যতো ভয়ানক প্রতিযোগিতার জায়গা আছে, সিনেমা বলুন, অ্যাথলেটিক্স বলুন, বা আমাদের সময়ে একটা সাধারণের থেকে একটু ভালো, স্বাচ্ছন্দ্যের চাকরি। শুধু যাঁরা হাতে অনির্বচনীয় হুণ্ডি পেয়েছেন, তাদের দিকে তাকালে ভুল হবে। পাশে সেইসব অজস্র উদাহরণ দেখতেই হবে যা গণনার বাইরে। নাসিম নিকোলাস তালেবের ভাষায় সেই সব অসফল মানুষ, ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা যা ঢাকা থাকে ঔজ্জ্বল্যের আড়ালে, তা-ই আমাদের 'সাইলেন্ট এভিডেন্স', 'নির্বাক প্রমাণ'? 

আরো সাদামাটা ভাষায়, কবিত্ব কাটিয়ে দিয়ে বললে, সমস্ত সফল মানুষের দুটিই মাত্র কমন হ্যাবিট, এক সার্ভাইভার বায়াস, দুই ভাগ্য।  

সেই বো বার্ণহ্যাম যেমন বলেছিলেন, "Taylor Swift telling you to follow your dreams is like a lottery winner telling you to liquidize your assets and buy Powerball tickets.”

অথবা জর্জ অরওয়েল যেমন বলে গেছেন আমাদের, 'keep the aspidistra flying' ! আমরা যাঁরা লিখবো লিখবো বলেও সাহস করে লেখক হয়ে উঠিনি কোনোদিন, হাতছানি পেয়েও সব ছেড়ে ঝাঁপ দিইনি মঞ্চের আলোর বৃত্তে। সার্ভাইভারশিপ বায়াস বুঝে গেছিলাম বড্ডো ভালো করে? হয়তো বা ! 



সূত্রঃ 

১) Marc Mangel & Francisco J. Samaniego (1984) Abraham Wald's Work on Aircraft Survivability, Journal of the American Statistical Association, 79:386, 259-267, DOI: 10.1080/01621459.1984.10478038

২) https://mcdreeamiemusings.com/blog/2019/4/1/survivorship-bias-how-lessons-from-world-war-two-affect-clinical-research-today

২) https://www.scientificamerican.com/article/how-the-survivor-bias-distorts-reality/

৩) M., Han, L., MD, P., & Singhal, S. (2020, May 27). Major challenges remain in COVID-19 testing. Retrieved July 27, 2020, from https://www.mckinsey.com/industries/healthcare-systems-and-services/our-insights/major-challenges-remain-in-covid-19-testing

Comments

Popular posts from this blog

কামাই

যে ভাষায় আমের নাম ...